ইসলামিক বই পড়েন কিন্তু লেখক আরিফ আজাদের নাম শোনেন নি বর্তমানে বাংলাদেশে এমন পাঠক পাওয়া খুবই কঠিন। পাঠকদের মাঝে আরিফ আজাদের জনপ্রিয়তা এতটায় বেশি যে তার বই মানেই একুশে বইমেলায় বেস্ট সেলার। তাকে বর্ণনা করতে গিয়ে ডঃ শামসুল আরেফিন বলেছেন - "আরিফ আজাদ আরিফ আজাদ একজন জীবন্ত আলোকবর্তিকা"। অন্যদিকে গার্ডিয়ান প্রকাশনী তার পরিচয় দিতে গিয়ে লিখেছে, “তিনি বিশ্বাস নিয়ে লেখেন, অবিশ্বাসের আয়না চূর্ণবিচুর্ণ করেন।”
সাম্প্রতিককালে এ দেশের সাহিত্য অঙ্গনে বিশেষ করে ধর্মীয় বিষয় নিয়ে যারা কাজ করে তাদের মধ্যে সবচেয়ে আলোড়ন তোলা লেখকদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন আরিফ আজাদ। তার বই অনলাইন এবং অফলাইন দুই জায়গাতেই বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অনলাইনে বই কেনার ই-কমার্স সাইট রকমারি.কম এ বেস্ট সেলার হয়েছেন। রকমারি.কম এ তার লেখা প্রত্যকটি বই পাঠক কর্তৃক অসংখ্য পসিটিভ রিভিও পেয়েছে। শুধু তাই নয় একুশে বইমেলায়ও তার লেখা প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ সিরিজের দুইটা বই নাম্বার ওয়ান সেলার হিসাবে খ্যাতি পেয়েছে।
তার বই গুলো কেনার জন্য পাঠকরা বই মেলার স্টলের সামনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকে। উনার লেখা বইগুলো সম্পর্কে কোন মিডিয়া বা পোর্টাল তেমন কোন প্রচার করে না এমনকি পত্রিকাতেও উনাকে নিয়ে তেমন কোন লেখা লেখি হয় না, টেলিভিশনে কোন প্রকার লাইভ হয় না।
তিনি নিজেও ফেসবুকে, বা অন্য কোন সোশাল মিডিয়াতে লাইভে আসেনি। তার ফেজবুক পেইজ, ইউটিউব চ্যানেল, ব্লগ সাইট ইত্যাদি থাকলেও তিনি এসব জায়গায় কখনো নিজের চেহারা দেখান না।
সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে অনার বইয়ের প্রকাশনীর লোকজন ও এর সাথে সংশ্লিষ্ঠ লোকজন ছাড়া কোন সাধারন পাঠক উনাকে এখন পর্যন্ত দেখেও নি, কিন্তু তার পরও তার বইগুলো পাঠক সমাজে এত বেশি জনপ্রিয় ও সমাদৃত।
লেখক আরিফ আজাদের সংক্ষিপ্ত পরিচয়
আরিফ আজাদ ১৯৯০ সালের ৭ই জানুয়ারি চট্টগ্রামে জন্মজন্মগ্রহণ করেন। তিনি চট্টগ্রাম জিলা স্কুল থেকে মাধ্যমিক শিক্ষাজীবন শেষ করেন। এরপর একটি সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং সেখানে উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করেন। ওনার লেখালেখির ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই তার লেখা বই সমূহ পাঠক মহলে ব্যাপক সাড়া ফেলে।
২০১৭ সালের একুশে বইমেলায় তার প্রথম বই ‘প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ’ প্রকাশ পায়। বইটির মূল প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল বিজ্ঞান ও ইসলামের সমন্বয় ঘটিয়ে নাস্তিকদের ভিবিন্ন ভ্রান্ত যুক্তির যথোপোযুক্ত বিজ্ঞানসম্মত উত্তর প্রদান করা। বইটি প্রকাশের সাথেসাথে তা পাঠকদের মাঝে তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করে। এবং এরপর তিনি একে একে আরো অনেক বই প্রকাশ করে যেগুলোর প্রত্যকটি পাঠকদের মাঝে তুমুল জনপ্রিয়।
তার এই জনপ্রিয়তা ও লেখক হিসেবে তার সফলতার বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনপ্রিয় শিক্ষক এবং লেখক আসিফ নজরুল বলেন - "একসময় ছেলেরা হিমু হতে চাইতো এখন ছেলেরা সাজিদ হতে চায়। আরিফ আজাদ আমাদের এই তরুণ প্রজন্মকে হিমু থেকে সাজিদে রূপান্তরিত করতে সক্ষম হয়েছেন।
এটাই একজন লেখকের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। তার ভিন্ন ধারার লেখার পদ্ধতি, লেখার মধ্যে মননশীল চিন্তাভাবনা, বিভিন্ন যুক্তির মাধ্যমে ইসলামের বিভিন্ন বিষয়গুলোকে মানুষের সামনে তুলে ধরা ইত্যাদি বিষয়গুলো তাকে অন্যসব লেখক থেকে আলাদা করেছে এবং পাঠকদের তার বইগুলো পড়ার প্রতি আকর্ষণ করেছে। বিশেষ করে তরুণ সমাজ তার বইগুলো পড়ার প্রতি বেশি আগ্রহি যার ফলে একটি বড় সংখ্যক পাঠকদের মাঝে তার গ্রহণযোগ্যতা তৈরী হয়েছে।
আরিফ আজাদের লেখা বইসমূহ
আরিফ আজাদের লেখালেখির জীবনের শুরু হয় মুলত ২০১৭ সালে প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ এ বইটি লেখার মাধ্যমে। নিজের বই লেখার পাশাপাশি তিনি সম্পাদনাও করে থাকেন।
তার লেখা বইগুলো হচ্ছেঃ
প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ ১ এবং ২
বেলা ফুরাবার আগে
আরজ আলী সমীপে
নবি জীবনের গল্প
জীবন যেখানে যেমন
কুরআন থেকে নেওয়া জীবনের পাঠ
এবার ভিন্ন কিছু হোক
হায়াতের দিন ফুরোলে
আরিফ আজাদের লেখা বইসমূহ একসাথে সংগ্রহ করুণঃ
প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ ১ এবং ২
সভ্যতার শুরু থেকেই সত্য ও মিথ্যার লড়াই চলে আসছে যা কিয়ামত পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। মানবতার সমাধান ইসলাম বরাবরই জাহেলিয়াতের ধারক-বাহকদের অপপ্রচারের সঠিক ও যথোপযুক্ত জবাব দেওয়ার মাধ্যমে তাদের সকল ষড়যন্ত্রের মোকাবেলা করে আসছে।
আধুনিক সভ্যতার এই সময়ে দাঁড়িয়ে এর রুপ অনেকাংশেই পরিবর্তিত হলেও এই লড়াই চলমান রয়েছে। আমাদের বর্তমান সমাজে এক প্রকার মানুষ আছে যারা নিজেদের সুশিল হিসেবে দাবী করে। বিভিন্ন বিষয়ে মুক্ত-চিন্তার নামে বিভিন্ন ভাবে ইসলাম ধর্ম ও তার অনুসারীদের হেয় প্রতিপন্ন করার চেস্টা করে। এছাড়াও বর্তমানে নাস্তিকরা তাদের ভ্রান্ত নিস্তিক্কবাদকে সমাজে প্রতিস্টা করার জন্য ও মুসলিমদের ইমান নষ্ট করার জন্য অত্যন্ত সক্রিয় ভাবে কাজ করে চলেছে।
স্যোসাল মিডিয়ার ক্রমবর্ধমান পরিসরকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন ভাবে মানুষের মনে সন্দেহের বীজ বোপন করছে। সন্দেহ থেকে সৃষ্ঠি হচ্ছে সংশয় এবং এক সময় তা রুপ নিচ্ছে অবিশ্বাসে। এভাবে ধীরে ধীরে এক অবিশ্বাসী প্রজন্মের গোঁড়াপত্তন হচ্ছে কিবোর্ডের মাধ্যমে।
এদের মূল টার্গেট হচ্ছে যুব সমাজ কেননা যুবকরাই হচ্ছে যেকোন জাতির চালিকা শক্তি এই সব যুবকদের ইমান কে সন্দেহের জাল দ্বারা আবৃত করে ফেলতে পারলেই তারা এ কাজে সর্বাধিক সফলতা লাভ করতে পারবে। অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হচ্ছে তাদের এই বিছানো জালে পা দিয়ে কিছু কিছু তরুন দিকভ্রান্ত হয়ে পড়ছে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে অবিশ্বাসীদের আপাত চমকপ্ৰদ এসব প্রশ্ন ও চ্যালেঞ্জের মোকাবেলায় হিমশিম আমাদের হিমসিম খেতে হচ্ছে।
আর এই সমস্যা সমাধানের একটি উপায় হিসেবে এক আশার প্রদিপের মত এই বইটি আমাদের সামনে নিয়ে এসেছেন আমাদের প্রিয় লেখক আরিফ আজাদ ভাই। বইটি পাঠকদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করার পাশাপাশি নাস্তিক পাড়ায় হইচই ফেলে দিয়েছে এবং নাস্তিকদের গাত্রদাহনের কারণ হয়ে দাড়িয়েছে।
'প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ ১' বইটি মুলত সমাজের তথাকথিত সুশিল নাস্তিকদের ভ্রান্ত যুক্তির ইসলাম ও বিজ্ঞান সম্মত জবাব দেওয়ার লক্ষে লেখা হয়েছে।
বইটিতে একটি কাল্পনিক চরিত্র সাজিদ কিভাবে তার নাস্তিক বন্ধুর ইসলামের বিভিন্ন বিষয় এর ওপর অবিশ্বাস থেকে সৃষ্ট যুক্তিগুলো বিজ্ঞানসম্মত নানা যুক্তিতর্কের মাধ্যমে খণ্ডন করে তা দেখানো হয়েছে। আর তাদের মধ্যকার এসব কথোপকথনের মধ্য দিয়েই বইটিতে লেখক নাস্তিকদের অনেক যুক্তি খণ্ডন করেছেন। বইটি পাঠকদের মধ্যে এতটায় জনপ্রিয়তা লাভ করে যে ইংরেজি ও অসমীয়া ভাষায়ও অনূদিত হয়েছে।
এর ইংরেজি অনুবাদটির নাম রাখা হয়েছে Paradoxical Sajid
'প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ ১' বইটির অবিশ্বাস্য সফতার পর এরই ধারাবাহিকতায় লেখক ২০১৯ সালের একুশে বইমেলায় এর সিকুয়াল ‘প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ - ২’ নিয়ে আসেন এবং এই বই টি সেই বছর বইমেলায় বেস্টসেলারে পরিণত হয়।
নাস্তিকদের ভ্রান্ত বিশ্বাস এবং যুক্তির জবাবে লেখা এই বই দুটি, তরুণ থেকে বয়স্ক প্রায় সকল বয়সের পাঠকদের কাছেই সমাদৃত হয়েছে।
এই বইটি পড়ার মাধ্যমে একজন মুসলিমের ইমান আরো ধীর হবে এবং নাস্তিকদের সাথে কথোপকথোনে আরো আত্মবিশ্বাসি হতে পারবে। শয়তান বিভিন্ন সময় আমাদের মনে অনেক উদ্ভট প্রশ্নের জন্ম দেয় যার সঠিক উত্তর না পেলে তা ধীরে ধীরে আমাদের ইমান কে দুর্বল করে দিতে পারে। এই বই দুটো শয়তানের সাথে ইমানি যুদ্ধে আমাদের হাতিয়ার হবে ইনশাল্লাহ।
প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ ১ বইটি সংগ্রহ করুনঃ
প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ ১ বইটির ইংরেজি অনুবাদটি সংগ্রহ করুনঃ
প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ ২ বইটি সংগ্রহ করুনঃ
প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ ১ ও ২ বই দুটি একত্রে সংগ্রহ করুনঃ
জীবনের জাগরণ সিরিজ
সাজিদ সিরিজের ঈর্ষনীয় সফলতার পর লেখক আরিফ আজাদ প্রথম নিজ বলয়ের বাইরে আসেন বেলা ফুরাবার আগে বইটির মাধ্যমে। বলাই বাহুল্য, এই বইটির মাধ্যমেও তিনি াঠক মহলে সাজিদ সিরিজের মতই ব্যপক প্রশংসা কুরিয়েছেন। এই বইটা অনেক যুবক-যুবতীর হিদায়াতের অসিলা হয়েছে, অনেক দিশেহারা ক্লান্ত প্রাণ স্বস্তি আর শান্তি নিয়ে নীড়ে ফিরেছে।
পাঠকদের প্রত্যাশা, ও প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করতে পেরে লেখক সিদ্ধান্ত গ্রহন করে বেলা ফুরাবার আগে এই সিরিজটাকে অনেক দূর নিয়ে যাওয়ার। এবং এই সিরিজটির নাম দেন জীবনের জাগরণ
এখন পর্যন্ত এই সিরিজের তিনটি বই প্রজাশিত হয়েছেঃ
বেলা ফুরাবার আগে
এবার ভিন্ন কিছু হোক
হায়াতের দিন ফুরোলে
জীবনের জাগরণ সিরিজের তিনটি বই একসাথে সংগ্রহ করুনঃ
বেলা ফুরাবার আগে
জীবনের জাগরণে
সিরিজের প্রথম বই হচ্ছে বেলা ফুরাবার আগে
। আরিফ আজাদের লেখা সেরা বইগুলোর মধ্যে 'বেলা ফুরাবার আগে' অন্যতম। তবে এই বইটা নাস্তিক্কবাদ নিয়ে লিখা কোন বই নয়! এই বইটি মূলত নিজেকে আবিষ্কারের একটি আয়না। বইটিতে আমাদের বর্তমান সমাজের চিত্রকে খুব সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে।
বর্তমানে যুবক যুবতীরা বিবাহ বহির্ভূত প্রেম, জাস্ট ফ্রেন্ড এর মত হারাম রিলেশনশিপের মধ্যে জড়িয়ে নিজেদের ঈমান কিভাবে নষ্ট করছে, ভার্চুয়াল জগতে প্রতিনিয়ত কিভাবে শয়তানের ধোঁকায় পড়ছে, মৃত্যুর খুব সন্নিকটে থাকা সত্বেও মৃত্যু ও পরকালের জীবনের ব্যাপারে ভয় না করে কিভাবে অবলিলায় জিবনের মুল্যবান সময় নষ্ট করছে ইত্যাদি বিষয় গুলো তুলে ধরা হয়েছে।
বইটিতে লেখক আল কুরআন ও হাদিসের আলোকে ১৮টি টপিকের মাধ্যমে দ্বীন ভুলে বিলাসিতায় ও পাপাচারে নিমজ্জিত তরুণদেরকে সতর্ক করেছেন এবং তার পাশাপাশি যারা সঠিক দ্বীনের পথ আঁকড়ে আছেন তাদের অনুপ্রেরণা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।
মানুষ হিসেবে আমাদেরকে এই পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছে শুধুমাত্র আল্লাহর ইবাদতের জন্য কিন্তু আমরা দুনিয়ায় আমাদের জীবিকা, ভোগবিলাসের পিছনে ছুটে জীবনের আসল উদ্দেশ্যই ভুলে যাই।
আরিফ আজাদ খুব সুন্দর ভাবে আমাদের একটা রিমাইন্ডার দেওয়ার চেষ্টা করেছেন যে - একসময় আমাদের এই জীবন শেষ হয়ে যাবে। এই জীবনের বেলা ফুরানোর আগেই আমাদের নিজের জীবনকে সুন্দরভাবে সাজিয়ে গুছিয়ে তুলতে হবে।
এছাড়াও দ্বীন পালন করতে গিয়ে একজন যুবক অথবা একজন মুসলমান যে বাধার সম্মুখীন হয়ে থাকে যেমনঃ চোখের মাধ্যমে পাপ করা, কোন প্রকার দুঃখ কষ্টে হতাশ হয়ে পড়া, নারী ও পুরুষের অবাদে মেলা মেশা করা, নামাযে মনোযোগ না থাকা ইত্যাদি বাধাগুলো কিভাবে আমরা অতিক্রম করতে পারি, কিভাবে আমরা আল্লাহ তাআলার ওপড় ভরসা রেখে প্রকৃত সুখ অনুসন্ধান করতে পারি ইত্যাদি বিষয়গুলো খুব যত্ন সহকারে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
যেসকল ভাই/বোন ইসলাম থেকে অনেক দূরে চলে গিয়েছেন বা যাচ্ছেন, তাদের চিন্তাধারার পরিবর্তন এবং ইসলামের প্রতি আকর্ষণ বৃদ্ধি করতে বইটি সহযোগী হবে ইন শা আল্লাহ।
এছাড়াও আরিফ আজাদের প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ ১ এবং ২ বই দুটো পড়ে অনেকের মধ্যে পরিবর্তন এসেছে। অনেকেই নিজেকে সাজিদের মত করে গড়ে তুলতে চায়। নিজেকে সাজিদ হিসেবে গড়ে তুলতে এই বইটি সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
লেখক এর ভাষায় - "বেলা ফুরাবার আগে
বইটি সাজিদ
তৈরির মিশন" যদিও বইটির মূল কেন্দ্রে আছে আমাদের যুবকশ্রেণি। তবে, বইটি যুবকদের পাশাপাশি যেকোন বয়সের মানুষের জন্যই উপযোগী।
বইটি পড়লে হয়তো মনে হতে পারে যে - সব কিছুই জানি, কিন্তু মানা হয় না। একটু চেষ্টা করলে হয়তো বিষয়গুলো আমরা মেনে চলতে পারি।
বেলা ফুরাবার আগে বইটি সংগ্রহ করুনঃ
এবার ভিন্ন কিছু হোক
বেলা ফুরাবার আগে বইটি পড়ার পর অনেক পাঠক লেখক কে বেলা ফুরাবার আগে বইয়ের দ্বিতীয় কিস্তি আনার অনুরোধ করেন। অসংখ্য পাঠকদের অনুরোধে ও যুবক বয়সের অন্তহীন ও ক্রমবর্ধমান সমস্যার কথা বিবেচনা করে লেখক আরিফ আজাদ এবার ভিন্ন কিছু হোক
নামে জীবনের জাগরণ
সিরিজের দ্বিতীয় বইটি প্রকাশ করেন।
যেহেতু, এই বইটি বেলা ফুরাবার আগে
বইয়ের দ্বিতীয় কিস্তি তাই এর আলোচ্য বিষয়াদি, বর্ণনার ধারা, ভাষার ব্যবহার, শব্দশৈলীর প্রয়োগ এর ব্যাপারে নতুন করে বলার কিছু নেই। দুটো বই প্রায় একই ধাঁচে লেখা হয়েছে। তবে এতটুকু বলা যেতে পারে, এই কিস্তিতেও পাঠকেরা বইটির পাতায় পাতায় নিজেদের খুঁজে পাবেন।
লেখক চেষ্টা করেছেন বইয়ের অধ্যায়গুলোকে জীবনঘনিষ্ঠ রাখতে, যাতে পাঠকেরা পড়ার সময় নিজের জীবনের অবস্থাকে কল্পনা করতে পারেন। পূর্বের কিস্তির বইটির মত এই বইতেও পাঠকেরা অনেকগুলো সমস্যার সমাধান পাবার পাশাপাশি পাবেন অনেক আশার আলো। একজন আশাবাদী মানুষ হিসেবে লেখক বইটিতে চেষ্টা করেছেন পাঠকদের আশা নিয়ে বাঁচতে শেখাতে ও স্বপ্ন দেখাতে।
যিনি বইটা হাতে নিয়ে পড়বেন, তার মনে হবে বইটা যেন তার জন্যই লেখা হয়েছে এবং বইয়ের কথাগুলো লেখক যেন তার পাশে বসে তাকে শোনাচ্ছে। পাঠকের মনোযোগ যাতে বিচ্ছিন্ন না হয়, সেদিকে লেখক সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার চেষ্টা করেছেন। আমাদের অনেকের জীবন একটা একঘেয়েমি চক্রে কেটে যাচ্ছে। আমরা অনুভব করি যে জীবনে একটা বদল প্রয়োজন, একটা পরিবর্তন ভীষণ ভাবে জরুরি। কিন্তু ঠিক কোথা থেকে শুরু করবো সেই পরিবর্তন, তা আমরা বুঝতে পারি না।
বইটি তে লেখক আমাদের সেই খুজে বেড়ানো প্রশ্নগুলোর উত্তর দেয়ার চেষ্টা করেছেন। জীবনের এক নতুন অধ্যায় শুরুর পথে হয়তো এই বইটি হতে পারে আমাদের পাথেয়।
এবার ভিন্ন কিছু হোক বইটি সংগ্রহ করুনঃ
হায়াতের দিন ফুরোলে
জীবনের জাগরণ
সিরিজের সবগুলো বই আমাদের নৈমিত্তিক ভুল ভ্রান্তিগুলোর তালিকা তৈরি করে এবং গল্প ও আড্ডায় বেড় করে আনা হয় সেই ভুল আর ভ্রান্তির সমাধান।
আমাদের জীবনের সাথে জড়িয়ে থাকা অতি সাধারণ ঘটনা, আপাতদৃষ্টিতে যেগুলোকে হয়ত অনেক সামান্য বলে মনে হয়, সেসকল ঘটনা থেকে খুজে বের করা হয় চিন্তার রসদ। আরিফ আজাদ জীবনের জাগরণ
সিরিজের তৃতীয় কিস্তি হিশেবে হায়াতের দিন ফুরোলে
বইটি প্রকাশ করেন।
পৃথিবীতে সবকিছুরই শুরু যেমন রয়েছে তেমনি তার শেষ ও রয়েছে। এটাই হলো দুনিয়ার পরম বাস্তবতা।
আমরা এই পৃথিবীতে এসেছি খুবই অল্প সময়ের জন্য। অন্য সবকিছুর মত আমাদের হায়াতের দিন ফুরিয়ে গেলে আমাদের সবাইকেই দুনিয়ার মায়া কাটিয়ে চলে যেতে হবে। একদিন হঠাৎ বেজে যাবে বিদায়ের ঘণ্টা।
আমাদের দিনগুলো কেটে যায় দুনিয়াবি কাজ ও দৌড় ঝাপে, রাতগুলো কাটে ঘুম কিংবা সোশাল মিডিয়ায় সময় পাড় করে। রাতে যখন বিছানায় যাই, তখন হয়ত একবারও ভেবে দেখি না সারাদিন কি করলাম, কি করতে আমরা দুনিয়ায় এসেছি আর কি করছি। যদিও কখনো মাথায় চিন্তা আসে তবে সেই হিসেব কখনোই মিলে না। দিন কেটে যাচ্ছে ঘণ্টার মত, মাস কেটে যাচ্ছে বছরের মত এবং বছর কেটে যাচ্ছে মাসের মত।
আর এমনি ভাবে আমাদের হায়াতের দিন গুলো অবহেলায়, অনাদরে জীবন থেকে চলে যাচ্ছে। এভাবে হয়ত একদিন পিছনে ফিরে দেখবো দুনিয়ার ক্ষনস্থায়ী জীবনের রসদ জোগাড় করতে গিয়ে আখেরাতের অসীম জীবনের থলে খালি রয়ে গেছে। আর তখন হয়ত অনেক দেরী হয়ে যাবে আর কিছুই করার থাকবে না।
সেই অবধারিত ক্ষণটা চলে আসার আগে আমদের উচিত আরেকবার জীবনের পেছনে ফিতে তাকানো। নতুনভাবে জীবনের হিশেব-নিকেষ গুলো মিলিয়ে নেয়া। সেই কঠিন পরিণতি আমাদের দুয়ারে এসে কড়া নাড়ার আগে, আমরা যদি আমাদের জীবন টা গুছিয়ে নিতে পারি। গুছিয়ে নিতে পারি আমাদের অসীম মহাযাত্রার সম্বল, যদি লাভ করতে পারি সুমহান রবের সন্তুষ্টি—তবেই সার্থক হবে আমাদের মানবজীবন। সেই হিশেব-নিকেষ মিলানোর কাজে একটি বিশ্বস্ত সঙ্গি হতে পারে, ‘হায়াতের দিন ফুরোলে’ বইটি।
হায়াতের দিন ফুরোলে বইটি সংগ্রহ করুনঃ
আরজ আলী সমীপে
সাম্প্রতিককালে আরজ আলী সমীপে একটি অন্যতম আলোচিত বই। আরিফ আজাদ মুলত ধর্মকে কেন্দ্র করেই লেখালেখি করে থাকেন আর এই বইটিও তার ব্যতিক্রম নয়।
বইটির শুরুতেই উনি আরজ আলী মাতুব্বর সাহেবের সংক্ষিপ্ত পরিচয় তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। আরজ আলী মাতুব্বর বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন। প্রাতিষ্ঠানিক কোন শিক্ষা ছিল না তার তবে তিনি স্ব শিক্ষায় শিক্ষিত হয়েছিলেন। ধর্মের প্রতি তার তীব্র বিতৃষ্ণা ছিল এবং এজন্যই তিনি মুলত কলম ধরেছিলেন।
স্রষ্টার অস্তিত্ব, সৃষ্টির উদ্দেশ্য, ধর্মের বিভিন্ন বিধি-নিষেধ ইত্যাদি বিষয় কে উপাত্ত করে তিনি লিখেছিলেন আরজ আলী মাতুব্বর সত্যের সন্ধান
বইটি এবং সন্ধান করার চেষ্টা করেছেন সত্যের।
কিন্তু তিনি যে সত্যের সন্ধান পেয়েছিলেন তা কি আদৌ সত্য?
তিনি তার লেখা এই বইটিতে প্রশ্ন, সন্দেহ, সংশয় উপস্থাপন করেছেন। তিনি সমাজে প্রচলিত বিভিন্ন কুসংস্কার কে মূল ইসলাম ভেবে প্রশ্ন ছুঁড়েছেন ইসলাম ধর্মের উপর। অথচ প্রচলিত এসব কুসংস্কারের সাথে কুরআন ও হাদিসের কোনো রকম সম্পর্কই নেই।
তিনি তার বইতে উল্ল্যেখ করেছেন যে- মুসলমানদের কাছে অমুসলিমরা নাপাক। অথচ এটা ইসলাম ধর্ম ও মুসলিমদের উপর তার এক মিথ্যাচার।
তিনি আরো লিখেছেন- ইবলিশ নাকি ফেরেশতা, ধর্ম নাকি জ্ঞানচর্চায় বাধা প্রদান করে! অথচ এগুলো ইসলামের উপর স্পষ্ট মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছুই নয়।
উনি ইবলিশ সম্পর্কে কোন প্রকার জ্ঞান ছাড়াই তা এই বইতে নিয়ে এসেছেন। এছাড়া মুসলিমদের জ্ঞান চর্চা এবং মুসলিমদের গণিত, বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় অবদানের কথা না জেনেই তিনি এ বিষয়ে মন্তব্য করেছেন।
এসব মিথ্যাচার ছাড়াও তিনি তার বইতে কিছু শিশুসুলভ যুক্তি প্রদান করেছেনঃ পৃথিবীর স্রষ্টা আছে কি? থাকলে আমরা দেখি না কেন? জান্নাত জাহান্নাম বলতে কিছু আছে কি? থাকলে বিজ্ঞানের চোখে ধরা দেয় না কেন?
আরিফ আজাদ তার আরজ আলী সমীপে বইটিতে আরজ আলী মাতুব্বরের এসব যুক্তিহীন প্রশ্নের বিজ্ঞানসম্মত উত্তর প্রদান করেছেন।
কোন কিছু বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে ধরা না পড়লেই কি অস্তিত্বহীন হয়ে যায়? মহাবিশ্বের ৯৫% জিনিস সম্পর্কেই এখন পর্যন্ত বিজ্ঞান কোন জ্ঞান রাখে না এবং দেখতেও পারে না। তাই বলে কি এসবের কোন অস্তিত্ব নেয়? কখনোই না।
সৃষ্টি জগতের স্রষ্টা পর্যন্ত পৌঁছতে না পারাটা বিজ্ঞানের সীমাবদ্ধতা। বিজ্ঞান কখনোই প্রকৃতির সকল রহস্য উদ্ঘাটন করতে পারেনি এবং ভবিষ্যতেও পারবে না। কিন্তু তাই বলে এই অদৃশ্য রহস্যগুলোকে কখনো অস্বীকারও করতে পারবে না।
সুতরাং আরজ আলী মাতুব্বরের এইসব প্রশ্ন আধুনিক বিজ্ঞানের দৃষ্টিতেই গ্রহণযোগ্য নয়।
কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশের কিছু নাস্তিক উনাকে আইডল হিসেবে মানে। তারা আরজ আলী মাতুব্বরের এসব যুক্তিহীন, অসাড়, শিশুসুলভ, বিকৃত মস্তিস্কপ্রসূত প্রশ্ন গুলোকে রেফারেন্স হিসেবে ধরে।
তাদের এসব ভ্রান্ত ও যুক্তিহীন প্রশ্নের জবাব দিতেই কলম ধরলেন আরিফ আজাদ। তিনি শুধু তাদের মিথ্যাচারের বিরুদ্ধেই কথা বলেন নি, বলেছেন ইসলামের মর্যাদা নিয়ে, তুলে ধরেছিলেন ইসলামের অবস্থাকে।
সত্য সন্ধান করার নামে আরজ আলী মাতুব্বর যেসকল মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন, সত্যের নামে মিথ্যার দ্বারা মানুষকে বিভ্রান্ত করেছেন এবং এদেশের কত শত যুবকদেরকে বিপথগামী করেছেন সেই আরজ আলী মাতুব্বরের মুখোশ উন্মোচন করার মাধ্যমে নাস্তিকদের উচিত শিক্ষা দিতেই রচিত হয়েছে আরজ আলী সমীপে
।
আরজ আলী মাতুব্বর সাহেব কী কী ভূলগুলো করেছেন, উনার প্রশ্নের গুলো কতটুকু সত্য? উনি কি আসলেই সত্যের সন্ধান করেছিলেন? এসকল বিষয়ের পুঙ্খানুপুঙ্খ উত্তর মিলবে "আরজ আলী সমীপে' বইটির মধ্যে।
লেখক তার এই বইতে আরজ আলী মাতুব্বর সাহেবের প্রশ্ন গুলোর সঠিক, সুন্দর এবং সামঞ্জস্যপূর্ণ উত্তর দিয়েছেন। বইটিতে তিনি যেভাবে কুরআন হাদিস এর রেফারেন্স এবং বিজ্ঞানের তথ্যবহুল যুক্তি প্রদান করেছেন তা পাঠক সমাজের কাছে এর গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি করেছে বহুগুন।
দীর্ঘকাল যাবত নাস্তিকরা এদেশে ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে যেসব লেখালেখি করে আসছে তার বিপরীতে তাদের দাঁত ভাঙ্গা জবাব দেওয়ার লক্ষ্যে খুব কম লেখকই কলম ধরেছেন। কিন্তু এক্ষেত্রে আরিফ আজাদ খুবই সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। তার লেখা এই বইটি নাস্তিক্যবাদের বিরুদ্ধে ইসলামি সাহিত্যের এক অনবদ্য সৃষ্টি।
যাদের মনে আল্লাহর অস্তিত্ব নিয়ে সন্দেহ জাগে তাদের অনেক প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে এই বইটি ইন শা আল্লাহ। এছাড়াও যারা মুসলিম অথচ ইসলাম সম্পর্কে খুব বেশি জ্ঞান রাখেন না তাদের জন্য বইটি অনেক উপকারে আসবে।
কেননা নাস্তিকদের ভুলভাল যুক্তিগুলো শুনে অনেক সময় ইসলাম সম্পর্কে কম জানার ফলে অনেক মুসলমান বিভ্রান্ত হয়ে যায় এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে এই বইটি সহায়ক হতে পারে।
আরজ আলী সমীপে বইটি সংগ্রহ করুনঃ
নবি জীবনের গল্প
মুসলিম হিসেবে আমাদের প্রত্যকের জন্য নবীজি (সাঃ) সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা রাখা, তার চরিত্র, আখলাক, কথা বার্তা, চলাফেরা ইত্যাদি বিষয় গুলো সম্পর্কে জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাকে নিয়ে একটু জানলে আরো জানতে ইচ্ছে করে পিপাসা যেন আরো বেড়ে যায় অনেক গুন।
তিনি এমন একজন মানুষ ছিলেন যাকে ঘিরে রয়েছে আজন্ম মুগ্ধতা। তার সম্পর্কে যারাই জেনেছেন তারাই তাকে ভালোবেসতে বাধ্য হয়েছেন। সর্বশ্রেষ্ঠ হয়েও তার মধ্যে ছিল না কোনো প্রকার অহংকার। তার ঘোর শত্রুরাও বিশ্বস্ততার জন্য তাকে 'আল আমিন বলে ডাকতো। আরিফ আজাদ তার ‘নবি জীবনের গল্প’ বইটির মাধ্যমে প্রিয় নবি (সাঃ) কে ভিন্নভাবে দেখার একটি দূরবীক্ষণ যন্ত্র স্থাপন করেছেন।
নবি জীবনের প্রতিটি পঙ্ক্তি, বড় অমূল্য সেই মুহূর্তগুলো তিনি খুব সুন্দর উপায়ে তুলে নিয়ে এসেছেন তার লেখনিতে। লেখক বইটিকে ২১ টি গল্পে সাজিয়েছেন এবং প্রতিটি গল্পের নাম এমন রেখেছেন যে গল্প শুরু করার আগেই কিছুটা আন্দাজ করা যায় তা কি বিষয়ে লেখা হয়েছে। এই গল্পগুলো মাধ্যমে লেখক দেখানোর চেষ্টা করেছেন প্রিয় নবি (সাঃ) কেমন ছিলেন ঘরে-বাইরে, মসজিদে-মজলিসে, সাহাবিদের কাছে, মদীনার অলিতে গলিতে, শক্ত চাটাইয়ে, কিভাবে সময় কাটাতেন তার প্রিয়তমা স্ত্রীদের সাথে কিংবা রাত্রি জাগরণে রবের সামনে ঘন্টার পর ঘন্টা ঠায় দাঁড়িয়ে থেকে।
লেখক বিভিন্ন ঘটনা উল্লেখ করার মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন তার ক্ষমাশীলতা, ধৈর্য্য, মানবতা, আত্মনিয়ন্ত্রণ, বিচক্ষণতা, শত্রুদের প্রতি সহমর্মিতা সহ আরও নানা উত্তম গুণাবলী সমূহ।
এ যেন আমাদের প্রিয় নবী (সাঃ) কে কাছ থেকে দেখার, আরো ভালভাবে বোঝার একটি মাধ্যম। পাঠক বইটি পড়ার মাধ্যমে আবিষ্কার করতে পারবেন এমন একজন ব্যক্তিকে, যিনি ছিলেন মানুষ, আবার একই সাথে আল্লাহর রাসুল। সৃষ্টির সেরা হয়েও কিভাবে তিনি তার পুরো জীবন কাটিয়েছেন অতি সাধারণভাবে।
বর্তমান স্বার্থপর, পুঁজিবাদী সমাজে আমরা দিশেহারা। অথচ আজ থেকে প্রায় ১৪০০ বছর পূর্বে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ এই মানুষটি আমাদের সঠিক পথের দিশা দেখিয়ে গেছেন। আমাদের ভোর বেলা ঘুম থেকে উঠার পর থেকে রাতে ঘুমোতে যাওয়া অব্দি প্রতিটি কাজে রয়েছে নবিজি (সাঃ) এর সবিস্তর নির্দেশনা। আর সেই পদ্ধতি গুলো গল্পের আলোকে জানতে হলে অবশ্যই পড়তে হবে এই বইটি!
আমাদের জীবন চলতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা গুলো খুব সুন্দর ভাবে গল্পে গল্পে উল্ল্যেখ করা হয়েছে এই বইতে। এই বইটি সেই আলোর দিশা খুজে পেতে আমাদের সহায়ক হবে ইন শা আল্লাহ।
ছোট্ট এই বইটি পড়ে বিষয় গুলো অনুধাবন করতে পারলে হয়তো পাঠকের মধ্যে চিন্তা ভাবনা জাগ্রত হবে। আল্লাহ যদি চান বইটির উছিলায় পাঠক পেয়ে যেতে পারেন আলোর দিশা এবং হিদায়াত।
বইটি অনেক সাবলীল ভাবে লেখা হয়েছে যাতে সকল বয়সী পাঠকের জন্য সহজভাবে বোধগম্য হয়। বিশেষ করে যারা সীরাহ পড়তে ইচ্ছুক নন অথবা জীবনে কখনো সীরাহ পড়েননি তারা এই বইটি পড়লে এটি তাদের নবীজির সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এবং তার সীরাহ পড়তে আগ্রহী করে তুলবে ইন শা আল্লাহ।
নবি জীবনের গল্প বইটি সংগ্রহ করুনঃ
জীবন যেখানে যেমন
সাহিত্য সমাজের দর্পণ স্বরূপ। সাহিত্যের মাঝেই একটা সমাজের ভালো মন্দ সবকিছুর একটি প্রতিচ্ছবি ফুটিয়ে তোলা সম্ভব। শুরু থেকেই আমাদের বাংলা সাহিত্যে আমাদের সমাজের অনেক চিত্র ফুটে উঠলেও একটা অজানা কারনে আমাদের সাহিত্যে আমাদের ধর্মীয় মুল্যবোধ, ধর্মীয় বিশ্বাস, ধর্মীয় জীবনাচার ইত্যাদি বিষয়গুলো তেমন একটা ফুটে ওঠে নি।
আমাদের সাহিত্য সমাজ সর্বদায় ব্যস্ত থেকেছে প্রেম, ভালবাসা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে। মানুষের জিবনাচার ও ধর্মীয় মুল্যবোধ নিয়ে লেখার মত সময় বা ইচ্ছা যেন তেমন কারোরি ছিল না।
এছাড়াও সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় কিংবা বুদ্ধদেব বসুর মত লেখকরা স্বরস্বতী পূজোর বন্দনা কিংবা যখন ‘মহাভারতের পথে’ নামক বই লিখে তখন তাদের ‘হিন্দু সাহিত্য’ কিংবা ‘কমিউনিস্ট লিটারেচার’ নামে দিয়ে বাংলা সাহিত্য থেকে ছুঁড়ে ফেলে না দিলেও। ইসলাম নিয়ে কেউ কিছু লিখলে আমরা তাকে- ওটা বাংলা সাহিত্য নয়, ওটা ইসলামি সাহিত্য বলে ছুড়ে ফেলে দেয়।
বাংলা সাহিত্যের দুনিয়া থেকে এই খবরদারির অবসান করার একটা পথ খোঁজার চেষ্টা করেছেন লেখক আরিফ আজাদ।
তিনি চান অনেক বেশি ইসলামি জীবন-দর্শন নির্ভর সাহিত্য রচনা করে সেগুলোকে সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে দিতে। বাংলা সাহিত্যের মাঝে এতোদিন যেখানে অবাধ মেলামেশার কথা থাকতো, সেটাকে হালাল মেলামেশার গল্প দিয়ে ঢেকে দিতে।
তার সেই চিন্তা থেকেই তিনি ‘জীবন যেখানে যেমন’ গল্পের বইটি লিখেছেন।
বইটিতে লেখক চেষ্টা করেছেন গতানুগতিকতার আবহ থেকে দূরে এমন কিছু গল্পের মাধ্যমে এমন এক ধারা তৈরি করতে যা একজন গল্প-পাঠককে যেমন গল্পের আনন্দে দেবে, অন্যদিকে তাকে ইসলামি জীবনাচারের ব্যাপারেও করে তুলবে শ্রদ্ধাশীল।
লেখক বইটিতে বিভিন্ন গল্পে কখনো পিতা, কখনো সন্তান, কখনো স্বামী আর কখনো নিরেট বন্ধু হিসেবে তুলে ধরেছেন জীবনের বাহারি রং। দেখানোর চেষ্টা করেছেন স্রষ্টার প্রতি মানুষের ভালোবাসা আবেগ। শিখানোর চেষ্ট করেছেন হতাশা গ্লানি দূর করার কৌশল।
জীবনে নদীর স্রোতে কিভাবে সরল সঠিক পথ খুজে নেওয়া যায়, জীবনের অলি গলিতে নিজেকে কিভাবে মানিয়ে নিতে হয়, সর্বোপরি কিভাবে সর্বাবস্থায় সন্তুষ্ট থাকা যায়, সেই জীবনের ছবিটি আকার চেষ্টা করেছেন আরিফ আজাদ।
বর্তমান সময়ে আধুনিকতার নামে শয়তান আমাদের বিভিন্নভাবে ধোকা দিচ্ছে। বইটি পড়ার মাধ্যমে একজন পাঠক গল্পগুলোকে তার নিজের জীবনের সাথে মেলাতে পাড়বে, তার মনে হবে লেখক যেন কেমন তার জীবনের গল্পটাই এখানে বলছে। অথবা গল্পটা যেন তার অতি পরিচিত যেন সেই নিজেই এই ঘটনা প্রত্যক্ষ্য করেছে।
জীবনের বহু দিকের গল্প তুলে আনার ফলেই লেখক গল্পগ্রন্থটির নামকরণ করেছেন ‘জীবন যেখানে যেমন’।
জীবন যেখানে যেমন বইটি সংগ্রহ করুনঃ
কুরআন থেকে নেওয়া জীবনের পাঠ
শুধুমাত্র একটি গ্রন্থ গোটা একটা সভ্যতাকে বদলে দিয়েছে— এমন ঘটনা দুনিয়ায় আর একটাও নেই। কী আছে সেই কুরআনে যার স্পর্শে বদলে যায় মানুষের চিন্তাধারা, জীবনপদ্ধতি?
আগাগোড়া পাপে জর্জরিত একটা সভ্যতা এই কুরআনের সংস্পর্শে হয়ে উঠেছে অজেয়, অপ্রতিরোধ্য। অন্ধকারে ডুবে থাকা একটা সমাজকে এই কুরআন বানিয়েছে আলোর উৎস।
কুরআন অবতীর্ণ হওয়ার প্রথম দিন থেকে কুরআন মানবজীবনের জন্য যতোখানি প্রাসঙ্গিক ছিলো, পৃথিবীর শেষ দিন পর্যন্ত তা ততোখানিই প্রাসঙ্গিক থাকবে। মানবজীবনের সকল বিষয় নিয়ে কুরআন কথা বলে, পথ দেখায়।
কিন্তু, যে কুরআন একদা বদলে দিয়েছে সভ্যতাকে, সেই কুরআন আজ চরম অযত্নে ও অবহেলায় পড়ে থাকে আমাদের শেলফের কোণায়। এখন আমরা কুরআনকে তিলাওয়াত করি, হয়তো বড়জোর অনুবাদ পড়ে কুরআন পাঠ শেষ করি। কিন্তু কুরআনকে আমরা অনুধাবন করি না। কোরআন থেকে এখন আমরা আমাদের জীবনের জন্য শিক্ষা না নিয়ে আমরা তা খুজে বেড়াচ্ছি পশ্চিমাদের মাঝে।
আমরা আমাদের বিকৃত মস্তিষ্ক থেকে পশ্চিমাদের পড়ানো পর্দা সরিয়ে কিভাবে কুরআন আকড়ে ধরে খুজে নিবো প্রয়োজনীয় রসদ, কীভাবে আমাদের ভাবনায় আনবো সমৃদ্ধি, চিন্তায় আনবো প্রখরতা তার খানিকটা আভাস হাজির করার চেষ্টা করা হয়েছে ‘কুরআন থেকে নেওয়া জীবনের পাঠ’ বইটিতে।
এই বইটি লেখা হয়েছে কুরআনে স্থান পাওয়া বিভিন্নি ঘটনাবলি ও তা থেকে আমরা কি শিক্ষা নিতে পারি এই বিষয় গুলো নিয়ে। যে জ্ঞানের মাধ্যমে আমরা আমাদের ব্যক্তি জীবনকে আরো সমৃদ্ধ করে তুলতে পারবো ইন শা আল্লাহ। কুরআনে আল্লাহ তাআলা আমাদের যে বার্তাগুলো দিয়েছেন তা আমরা ঠিক মতো বুঝতে পারিনা। এই বইটি আমাদের কুরআনের বেশ কিছু নির্দেশনা বুঝতে সহায়তা করবে।
বইটির একজন পাঠককে আল্লাহ ও আল্লাহর সৃষ্টি ও সৃষ্টির আসল উদ্দেশ্য কি এই বিষয়গুলো সম্পর্কে ভাবিয়ে তুলবে। আল্লাহ তায়ালা কুরআনকে কতটা জীবন ঘনিষ্ট করে নাজিল করেছেন, কীভাবে তা আমাদের জীবনের কথা বলে, কীভাবে আমাদের জীবনের অনুষঙ্গে ওতোপ্রোতভাবে জড়িয়ে যায়— সেই বিষয়গুলো উপলব্ধি করতে পারবে।
মানুষ সামান্য বিপদে যেখানে দিশেহারা হয়ে পরে,সেখানে আম্বিয়া আলাইহিমুস-সালাম কঠিন সময়ে কী সুন্দর সংযম আর ধৈর্যের সাথে নিজেকে এগিয়ে নিয়েছেন। সেসকল পরিস্থিতে আমাদের জীবনের সাথে তাদের জীবনকে মিলিয়ে নেয়ার যোগসূত্র তৈরি করে দেয় এই "আল কুরআন"। আর এই বিষয়টাকে অসাধারণ ভাষ্যে সাজিয়েছেন লেখক আরিফ আজাদ তার "কুরআন থেকে নেওয়া জীবন পাঠ" বইটিতে।
ইব্রাহিম (আ:) এর আল্লাহর প্রতি আনুগত্য, নূহ (আ:) এর অপার ধৈর্য্য, মূসা (আ:) এর বুদ্ধিদীপ্ত দোয়া, সূরা ফালাকের মধ্যে হিংসুকের গোপন রহস্য ফাস, নবীকন্যারদের তাকওয়া ইত্যাদি অনেক বিষয় খুব সুন্দর ভাবে উঠে এসেছে এই বইতে। আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের জীবনের গল্প পড়তে পড়তে পাঠক নিজের অজান্তেই ঢুকে পড়বে কুরআনের ভাবনার জগতে, সেই জগত থেকে আলো নিয়ে পাঠক আবার ফিরে আসবে জীবনের ধারায়— বইটি এভাবেই সাজানো হয়েছে।
এই বইটিকে লেখকের কুরআন অধ্যয়নের একটি নোটখাতা বলা যেতে পারে। লেখকের কুরআন নিয়ে ভাবনাগুলো যদি একজন পাঠককে ভাবতে উদ্ধুব্ধ করে সেটায় হয়ত হবে লেখকের একমাত্র সার্থকতা।
কুরআন থেকে নেওয়া জীবনের পাঠ বইটি সংগ্রহ করুনঃ