অন্যরকম বিজ্ঞানবাক্স কি এবং কেন প্রয়োজন? - বিজ্ঞানবাক্স গুলোর পরিচিতি। What is Onnorokom Science Kit and why do we need this?
বর্তমানে বিজ্ঞান আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। আমরা একটা মুহূর্তও বিজ্ঞানের কোন না কোন কিছু ব্যবহার না করে কাটানোর কথা ভাবতেও পারি না। তাই বর্তমান সময়ে বিজ্ঞানকে ভালোভাবে জানা এবং বিজ্ঞান মনস্ক মানুষ গড়ে তোলা সময়ের দাবী। কিন্তু আমাদের মত দেশে যেখানে শিক্ষা ব্যবস্থার নানা রকমের সমস্যা পরিলক্ষিত, সেখানে বিজ্ঞান মনস্ক মানুষ গড়ে তোলা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এই কঠিন চ্যালেঞ্জ কে সহজে রুপান্তর করতে হলে আমাদের হতে হবে অনেক বেশি সচেতন ও সতর্ক।
বর্তমান এই আধুনিক পৃথিবীতে আমাদের সন্তানদের বিজ্ঞান মনস্ক করে গড়ে তুলতে অন্যরকম গ্রুপ এর অন্যরকম বিজ্ঞানবাক্স একটি চমৎকার উপকরণ। আজকের এই আর্টিকেল এ আমরা বিজ্ঞান বক্স কি? কেন এটি প্রয়োজন বা আদোতেও এর প্রয়োজন আছে কি না? ইত্যাদি প্রশ্নগুলোর উত্তর দেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন বিজ্ঞান বাক্সের পরিচয় ও সংক্ষিপ্ত বর্ণনা তুলে ধরার চেষ্টা করবো।
বিজ্ঞানবাক্স কী?
আপনি যদি বিজ্ঞানবাক্স নাম টি প্রথম শুনে থাকেন তাহলে নামটি শোনার পর আপনার মাথায় প্রথম প্রশ্ন যেটি হয়ত চলে এসেছে সেটি হলঃ বিজ্ঞান বাক্স আসলে কী?
বিজ্ঞানবাক্স মুলত বাংলাদেশের প্রথম সায়েন্স কিট। যেটি এর কোম্পানির নাম অনুশারে অন্যরকম বিজ্ঞান বাক্স নামেও বাংলাদেশে সুপরিচিত। মূলত পাঁচ বছর বা তার বেশি বয়সী ছাত্র-ছাত্রীরা যেন আনন্দের সাথে খেলার ছলে হাতে-কলমে বিজ্ঞান শিখতে পারে তার জন্য এটি একটি শিক্ষণীয় খেলা।
হ্যা, খেলা বলছি ঠিকই তবে একে শুধুমাত্র খেলা ভেবে ভুল করবেন না। প্রতিটি বিজ্ঞান বাক্সের মধ্যে বিভিন্ন বিজ্ঞান বিষয়ক এক্সপেরিমেন্ট করার জন্য যা যা উপকরন প্রয়োজন তা দিয়ে দেয়া থাকে। যেগুলো দিয়ে বাচ্চারা আসলে খেলা করবে কিন্তু সেই খেলাটা হবে বিজ্ঞান নিয়ে খেলা। যেমনঃ শিশু কিশোররা চুম্বক নিয়ে খেলা করে থাকে এবং পাঠ্য বইয়েও চুম্বক সম্পর্কিত বিভিন্ন টপিক ও এক্সপেরিমেন্ট থাকে। চুম্বক সম্পর্কিত ২৬ টি মজাদার এক্সপেরিমেন্ট নিয়ে একটি বিজ্ঞান বক্স রয়েছে যার নাম হল – চুম্বকের চমক
বিজ্ঞান বাক্স।
আমাদের দেশে দেখা যায় বাচ্চারা বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয় গুলো নিয়ে পড়াশোনা করে ঠিকই কিন্তু সেই বিষয় গুলো নিয়ে বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্ট নিজের চোখে দেখা বা নিজের হাতে করার সুযোগ পায় না। সেই বিষয় টার একটি পূর্নাঙ্গ সমাধান হতে পারে এই বিজ্ঞানবাক্সগুলো।
বিভিন্ন টপিকের ওপড় সাজানো বিজ্ঞানবাক্সগুলোকে এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যে বাচ্চারা নিজে নিজেই বাক্সে দেয়া উপকরনগুলো দিয়ে বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্ট করার মাধ্যমে বিজ্ঞানের অনেক নতুন বিষয় জানতে পারবে ও শিখতে পারবে।
বাচ্চারা যেন খুব সহজে সবকিছু বুঝতে পারে তাঁর প্রতিটি বিজ্ঞান বাক্সের মধ্যে রয়েছে সহায়ক বই ও ভিডিও টিউটোরিয়াল। বইগুলোতে প্রত্যেকটি এক্সপেরিমেন্ট খুব সুন্দরভাবে ধাপে ধাপে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। তাঁর পাশাপাশি কোন এক্সপেরিমেন্ট টির পেছনে বিজ্ঞানের কোন কারণ বা সূত্র কাজ করছে তা চিত্রসহ উল্লেখ করে দেয়া হয়েছে।
যদিও বিজ্ঞানবাক্স গুলো ৭ বছর থেকে ১৬ বছরের সকল বাচ্চাদের জন্যই উপযুক্ত। কিন্তু ক্লাস ৫ এর নীচে হলে অভিভাবক সাথে থাকাটা জরুরী এবং এক্সপেরিমেন্টগুলো করার সময় অনেক ক্ষেত্রে মোম ও আগুন নিয়ে কাজ করতে হতে পারে তাই অবশ্যয় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
বিজ্ঞান বাক্সে কি কি থাকে?
এখন পর্যন্ত যতগুলো বিজ্ঞান বাক্স বাজারে এসেছে তাঁর মধ্যে শুধু `বিজ্ঞানবাক্স পঞ্চম শ্রেনি` ব্যতীত সবগুলো বিজ্ঞান বাক্সই কোন একটি নির্দিষ্ট টপিক কে কেন্দ্র করে বানানো। যেমনঃ স্থির তড়িৎ ও চল তড়িৎ এর ওপড় রয়েছে তড়িৎ তান্ডব
বিজ্ঞানবাক্সটি, আলোর টপিকের জন্য রয়েছে আলোর ঝলক
বিজ্ঞানবাক্সটি, রসায়নের বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়ার জন্য রয়েছে রসায়ন রহস্য
বিজ্ঞানবাক্সটি।
প্রতিটি বিজ্ঞান বাক্সেই মুলত ওই টপিকের ওপড় ২০-৫০
টি এক্সপেরিমেন্ট দেওয়া থাকে এবং সেগুলো করার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ, গাইড ম্যানুয়াল ও নিরাপত্তা ডিভাইস দেওয়া থাকে। টপিক ও এক্সপেরিমেন্ট গুলোর ওপড় ভিত্তি করে উপকরণ এর ভিন্নতা থাকে।
প্রতিটি এক্সপেরিমেন্ট বিজ্ঞান বইয়ের বিভিন্ন অধ্যায়ের সাথে মিলিয়ে করা যাবে। বিজ্ঞান বাক্স গুলোর মধ্যে পঞ্চম শ্রেণির বিজ্ঞানবাক্স
টি শুধুমাত্র পঞ্চম শ্রেণির জন্যই করা হয়েছে তাই এতে কেবল পঞ্চম শ্রেণীর বিজ্ঞান বইয়ের এক্সপেরিমেন্ট গুলোই দেওয়া হয়েছে। বাকি বিজ্ঞানবাক্সগুলি দিয়ে চতুর্থ থেকে দশম শ্রেণির বিভিন্ন অধ্যায়ের এক্সপেরিমেন্ট গুলো হাতে-কলমে করে দেখা যাবে। এগুলো সম্পর্কে হয়ত সে এখন তাঁর বিজ্ঞান বইয়ে পড়ছে অথবা ভবিষ্যতে পড়বে। এছাড়াও বাক্সগুলোর মধ্যে রয়েছে সায়েন্টিফিক গেম এবং পাজল সম্বলিত স্মার্টকিট। তাই যে বয়সেই আপনার সন্তানকে এই বিজ্ঞান বাক্সগুলো দেন না কেন তাদের জন্য এগুলো ভীষণভাবে কাজে আসবে।
নিচে প্রতিটি বিজ্ঞানবাক্স সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
বিজ্ঞানবাক্স কেন প্রয়োজন?
সত্যি বলতে বিজ্ঞানবাক্স শিশু-কিশোরদের জন্য এত বেশি উপকারী যে তা বলে শেষ করা যাবে না। নিম্নে কয়েকটি পয়েন্ট তুলে ধরা হলঃ
বাচ্চাদের মেধার বিকাশ ঘটাতেঃ মেধার বিকাশ অনেকাংশেই চর্চার সাথে সম্পর্কযুক্ত। বিজ্ঞানবাক্স বাচ্চাদের সারাক্ষন কিছু না কিছু চর্চা করার জন্য সহায়তা করে। তারা তাদের বইয়ের বিভিন্ন অধ্যায়ে যেসকল সূত্রগুলি পড়েছিলো, সেগুলি বিজ্ঞানবাক্সের মাধ্যমে হাতেকলমে পরীক্ষা করে দেখার মাধ্যমে তাদের ভাবনার অনেক নতুন দুয়ার খুলে যায়, ধিরে ধিরে তারা হয়ে ওঠে অন্য সকলের চেয়ে আলাদা এবং অনন্য।
পড়াশোনায় ভাল করে তুলতেঃ বিজ্ঞানবাক্স বাচ্চাদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করার প্রবণতা ও নতুন বিষয়ে জানার আগ্রহ তৈরি করে। আমাদের কাছে বিজ্ঞান বিষয়টি বরাবরই অনেকটা রসহীন এবং কঠিন হিসেবে গণ্য হয়ে আসে। আমাদের মধ্যে হয়ত অধিকাংশ মানুষই আমাদের বইয়ের মধ্যে থাকা সূত্র এবং উদাহরণগুলি মুখস্থ করে পরীক্ষায় পাশ করে এসেছি। আমাদের সন্তানেরা যেন আমাদের সেই রাস্তা অনুসরন না করে, তারা যেন আনন্দ ও সাচ্ছ্যন্দের সাথে বিজ্ঞান শিখতে পারে, এজন্যেই মুলত বিজ্ঞানবাক্সের আবির্ভাব। নিজে নিজে বিভিন্ন মজার এক্সপেরিমেন্ট করার মাধ্যমে আপনার বাচ্চার মধ্যে এক ধরণের আত্মবিশ্বাস তৈরি হবে এবং সে বিজ্ঞানের আসল সৌন্দর্য কে বুঝতে ও উপলব্ধি করতে পারবে। তখন তাঁর কাছে বিজ্ঞান আর রসহীন বা মুখস্থ করার বিষয় হিসেবে মনে হবে না বরং সে এই বিষয়টাকে বুঝে বুঝে পড়তে শিখবে এবং বিষয়টিকে ভয় পাওয়ার পরিবর্তে ভালবাসতে শুরু করবে।
ডিজিটাল আসক্তি দূর করতেঃ বিজ্ঞানবাক্স গুলো দিয়ে খেলার মাধ্যমে বাচ্চারা সায়েন্স এক্সপেরিমেন্টগুলো করতে ব্যস্ত থাকবে, এবং তারা নতুন সব জিজ্ঞাসার সম্মুখীন হবে। এই জিজ্ঞাসাগুলোর/প্রশ্নগুলোর জবাব খুজতে গিয়ে অনেক নতুন নতুন সায়েন্স প্রোজেক্ট তৈরি করতে উৎসাহী হবে। বিভিন্ন সায়েন্স ফেয়ার বা ফেস্টিভ্যালে বাচ্চারা তাদের করা এসব প্রোজেক্ট গুলো দেখিয়ে প্রশংসা এবং পুরস্কার পেতে সক্ষম হবে। এভাবে তারা এক নতুন দুনিয়ায় প্রবেশ করতে সক্ষম হবে, এভাবে বাচ্চারা ডিজিটাল ডিভাইসের আসক্তি থেকে অনেকাংশে মুক্ত থাকতে পারবে।
সন্তানের সাথে কোয়ালিটি সময় কাটাতেঃ অধিকাংশ সময় আমরা বাচ্চাদের হাতে অনেকটা বাধ্য হয়ে বিভিন্ন খেলনা যেমনঃ খেলনা পিস্তল কিংবা পুতুল ইত্যাদি তুলে দিয়ে থাকি, যেগুলো হয়ত তাকে খুশি রাখছে, তাঁর অবসর সময়টুকু কাটাতে সাহায্য করছে, কিন্তু সেই খেলার মাধ্যমে তাঁর কোন প্রকার মানসিক বিকাশ হচ্ছে না। বিজ্ঞানবাক্সের বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্টগুলো আপনি নিজে সন্তানকে সাথে নিয়ে করতে পারেন। এর মধ্য দিয়ে আপনার সন্তানের সাথে আপনার অনেক সুন্দর মুহূর্ত কাঠবে ও মধুর স্মৃতি তৈরি হবে এবং আপনার সন্তানকে আপনি অনেক নতুন বিষয়ে শেখাতে পারবেন।
বিজ্ঞানবাক্স - পঞ্চম শ্রেণী
পঞ্চম শ্রেণির বিজ্ঞান বাক্সটিকে পঞ্চম শ্রেণির বিজ্ঞান বইয়ের একটি কমপ্লিট প্র্যাকটিকাল প্যাকেজ হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। কেননা এই বিজ্ঞান বাক্সটিকে শুধুমাত্র পঞ্চম শ্রেণির জন্য স্পেশালভাবে তৈরী করা হয়েছে। বিজ্ঞান বইয়ে পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন বিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান সহ যত বিষয়ের এক্সপেরিমেন্ট আছে সবগুলোই এই একটি বক্সের মধ্যে প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও ক্লাস সিক্সের কিছু বিষয়ের অগ্রিম ধারণাও দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।
পঞ্চম শ্রেণির বিজ্ঞান বইয়ের মধ্যে থাকে বিভিন্ন অধ্যায়ের মোট ২৮টি এক্সপেরিমেন্ট নিয়ে এই বিজ্ঞান বাক্সটিকে সমৃদ্ধ করা হয়েছে। এক্সপেরিমেন্ট গুলোর মধ্যে রয়েছে খাদ্য শৃঙ্খল, ব্যারোমিটার, বায়ুশক্তি, ইত্যাদি।
এই মজার সব এক্সপেরিমেন্টগুলো বাচ্চারা যেন খুব সুন্দরভাবে করতে পারে তাঁর জন্য এর মধ্যে দেয়া হয়েছে সোলার সেল, জেনারেটর, উইন্ডমিল মডিউল, বাযার মডিউল, এলইড মডিউল, কার্বন, চারকোল এর মত মোট ৬০ উপকরণ।
বাচ্চারা যেন নিজেরা খুব সহজে এই এক্সপেরিমেন্টগুলো করতে পারে সেজন্য রয়েছে ৪৭ পাতার প্রমাণ সাইজের মাল্টিকালার ম্যানুয়াল।
ম্যানুয়াল দেখে এক্সপেরিমেন্টগুলো করতে যদি সমস্যা হয় তাঁর সমাধান হিসেবে onnorokombigganbaksho ইউটিউব চ্যানেলে এক্সপেরিমেন্টগুলোর টিউটোরিয়াল দেয়া আছে।
আলোর ঝলক
আলোর ঝলক বিজ্ঞানবাক্সটি আলো বিষয়ক দারুণ সব সায়েন্স এক্সপেরিমেন্ট দিয়ে তৈরী করা হয়েছে! আলো সম্পর্কিত সকল জটিল বৈজ্ঞানিক বিষয়গুলোকে বাচ্চারা যেন খেলার মাধ্যমে উপভোগ করে পারে এবং বিষয়গুলোকে খুব সহজে আয়ত্তে আনতে পারে সেভাবে বানানো হয়েছে এই বিজ্ঞানবাক্সটি।
এই বিজ্ঞানবাক্সটিতে আলো সম্পর্কিত ২৫টি এক্সপেরিমেন্ট দেয়া হয়েছে যেগুলো বিভিন্ন ক্লাসের বিজ্ঞান বইতে বাচ্চারা পড়ছে কিংবা ভবিষ্যতে পড়বে। আগুন ছাড়াই কিভাবে কাগজ জ্বালানো যায়, আয়না দিয়ে কিভাবে রংধনু তৈরি করা যায়, আলোকে কিভাবে বলের মত বাউন্স খাওয়ানো যায়, জাল টাকা চেনা ইত্যাদি এক্সপেরিমেন্টগুলো বাচ্চাদের আলোর আনন্দময় জগতে নিয়ে যাবে এবং আপনার লিটল সায়েন্টিস্টকে আনন্দ দেয়ার পাশাপাশি বিজ্ঞান শেখাবে।
একটি ম্যানুয়াল বই দেয়া আছে যার মধ্যে গল্পের আদলে প্রতিটি এক্সপেরিমেন্টের চিত্র এবং বর্ণনা তুলে ধরা হয়েছে।
এক্সপেরিমেন্টগুলো করতে সকল প্রয়োজনীয় উপকরন যেমনঃ মোমবাতি, ছিদ্রযুক্ত কাগজ, পেরিস্কোপ বক্স, ক্যালাইডোস্কোপ বক্স, স্ট্রোবোস্কোপ, মোটর, পিনহোল ক্যামেরা বক্স, বাউন্সিং বল, কার্ডবোর্ড, আয়না, ফ্ল্যাশ লাইট, উত্তল লেন্স, ব্যাটারি ইত্যাদি দিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে এগুলো ছাড়া আরো কিছু সহজলব্ধ উপকরন দেয়া হয়নি যেমনঃ গ্লাস, বাটি, প্লাস্টিক বোতল, পেন্সিল ইত্যাদি।
আলোর ঝলক
বিজ্ঞানবাক্সটি আমাদের সকলের দেখা অতিব সুন্দর রঙধনুর পিছনের বিজ্ঞান থেকে শুরু করে বর্তমান অত্যাধুনিক 3D টিভি/ সিনেমার মেকানিক্স পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে খুব সুন্দর ও স্পষ্ট ধারণা দেবে। এর জন্য বাক্সের মধ্যে একটি 3D চশমা এবং কয়েকটি 3D ছবি দিয়ে দেয়া হয়েছে।গ্রেটিং গ্লাসের মাধ্যমে শিশুরা আমাদের দেখা জগতের মধ্যেই যে সুন্দর ও আশ্চর্য হওয়ার মত এক রঙিন জগত লুকিয়ে আছে তা দেখতে এবং জানতে পারবে, এবং আমরা যা দেখি তার পিছনে যে কত রকমের বিষয় লুকিয়ে আছে তাঁর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা খুজে পাবে।
ম্যানুয়াল দেখে এক্সপেরিমেন্টগুলো করতে যদি সমস্যা হয় তাঁর সমাধান হিসেবে onnorokombigganbaksho ইউটিউব চ্যানেলে এক্সপেরিমেন্টগুলোর টিউটোরিয়াল দেয়া আছে।
এই বিজ্ঞানবাক্সের সবগুলো এক্সপেরিমেন্ট করার মাধ্যমে আপনার বাচ্চার সামনে দেখার নতুন দিগন্ত খুলে যাবে– আমাদের দেখা জগতের মধ্যে যে আরো রহস্য লুকিয়ে আছে, তা জেনে বিস্মিত হবে আপনার সন্তান!
আলোর ঝলক বিজ্ঞানবাক্সটির একটি ইংরেজি ভার্সনও রয়েছে যেটির নাম Color Of Light
চুম্বকের চমক
চুম্বকের চমক বিজ্ঞানবাক্সটি তৈরী করা হয়েছে চুম্বক বিষয়ক দারুণ সব সায়েন্স এক্সপেরিমেন্ট দ্বারা! শিশুমনে সবচেয়ে বেশি বিস্ময় জাগানো জিনিস গুলোর মধ্যে চুম্বক অন্যতম। কীভাবে ছোট একটি বস্তু অন্য কিছুকে দূর থেকে টেনে আনতে পারে, আবার অন্য একটি বস্তুর সাথে লেগে থাকে, উল্টো করে ধরলেও পড়ে যায় না এসব নিয়ে ভাবনার কোন শেষ নেয়।
সেই চুম্বক নিয়ে খেলার মাধ্যমে বাচ্চারা যেন বিজ্ঞান শিক্ষায় আগ্রহি হয়ে ঊঠে সেই লক্ষে অন্যরকম বিজ্ঞানবাক্সের এই আয়োজন চুম্বকের চমক
।
ব্যাটারি এবং পেরেক ব্যবহার করে মোটর কিভাবে তৈরি করতে হয়, কিভাবে একটি চুম্বকের চারপাশে লোহার গুড়ো ছড়িয়ে দিয়ে বলরেখা দৃশ্যায়ন দৃশ্যায়ন করা যায়, ডিম্বচুম্বক ব্যবহার করে কিভাবে সঙ্গীত তৈরি করতে হয়, বড় চুম্বক থেকে বাচ্চা চুম্বক তৈরির মাধ্যমে কিভাবে পাঠ্যবইয়ের ডোমেইন তত্ব প্রয়োগ করা যায়, হাতের স্পর্শ ছাড়াই কোন বস্তুকে কিভাবে সরানো যায়, ম্যাগনেটিক নিক্তি তৈরি, অচুম্বক পদার্থের সাথে চুম্বকের সংস্পর্শে স্লো মোশন ম্যাজিক দেখা, কলিং বেল তৈরি, তারকে লাফাতে সাহায্য করা ইত্যাদির মত মোট ২৬টি এক্সপেরিমেন্ট রয়েছে এই বক্সটিতে।
এক্সপেরিমেন্ট গুলো করার জন্য দণ্ড চুম্বক, জেমস ক্লিপ, নিয়োডিমিয়াম চুম্বক, লোহার গুড়ো, রিং ম্যাগনেট, পেন্সিল, কম্পাস, সুইচ, খেলনা কুমির, খেলনা সুপারম্যান, মোটর, রিড সুইচ, সুতো, ফোম, ডিম্বাকৃতির চুম্বক ইত্যাদির মত প্রয়োজনিয় ১৫ টিরও বেশি উপকরন দেওয়া আছে বক্সটিতে!
বাচ্চারা নিজে নিজে যেন এক্সপেরিমেন্ট গুলো করতে পারে সেজন্যে ৪০ পাতার বিস্তারিত কালারফুল ম্যানুয়াল দিয়ে দেয়া হয়েছে। যেখানে প্রতিটা এক্সপেরিমেন্ট কিভাবে করতে হবে তা ছবিসহ বিস্তারিত বর্ননা করা হয়েছে।
এক্সপেরিমেন্ট গুলো করার পাশাপাশি চুম্বকের যে থিওরি গুলো এসব এক্সপেরিমেন্ট গুলোর পিছনে ভূমিকা পালন করছে সেগুলো খুব সুন্দরভাবে বুঝে ফেলার জন্য আছে ৬০ পাতার রঙ্গিন একটি গল্পের বই।
কোথাও বুঝতে না পারলে যেন নিজ বাসায় বসে ভিডিও দেখেই এক্সপেরিমেন্টগুলো করতে পারে তার জন্য রয়েছে সিডি যেখানে সবগুলো এক্সপেরিমেন্টের ভিডিও টিউটোরিয়াল দেয়া আছে। এছাড়া এই ভিডিও টিউটোরিয়াল গুলো onnorokombigganbaksho ইউটিউব চ্যানেলেও দেয়া আছে।
আমাদের প্রতিদিনের ব্যবহারের নানা যন্ত্রে চুম্বকের ব্যবহার রয়েছে। সেগুলোর বিষয়ে জানতে পেরে আপনার সন্তান চমৎকৃত হবে। চুম্বক নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করতে করতে তাদের মনে অসংখ্য প্রশ্ন জাগবে। এই প্রশ্নগুলো জাগাবার জন্যেই মুলত এই অসাধারণ চুম্বকের চমক
বিজ্ঞানবাক্সটি। এই বক্সটি নিয়ে খেলা করার মাধ্যমে তাদের সময়টাও অনেক ভালো কাটবে।
চুম্বকের চমক বিজ্ঞানবাক্সটির ইংরেজি ভার্সন ও রয়েছে যেটির নাম Magic of Magnet
তড়িৎ তান্ডব
তড়িৎ তান্ডব বিজ্ঞান বাক্সটি তড়িৎ বিষয়ক নানান মজার সব এক্সপেরিমেন্ট দ্বারা তৈরী করা হয়েছে।
ফল মূল অথবা শাকসবজি দিয়ে কিভাবে খুব সহজে লাইট জ্বালানো যায়, চুলের মধ্যে কিছুক্ষন বেলুন ঘষে ভেতরে স্থির তড়িৎ তৈরি করে তা দিয়ে পানির ধারাকে কিভাবে বাঁকানো যায়, পরিবর্তনশীল রোধের সূত্রকে ব্যবহার করার মাধ্যমে লাইট দিয়ে কিভাবে লাইট জ্বালানো যায়, সরল বর্তনীর সূত্রকে প্রয়োগ করার মাধ্যমে কিভাবে শব্দ সংকেত তৈরি যায় ইত্যাদি সহ এমন মজার মজার ২০টি পরীক্ষণ রয়েছে এই বক্সটিতে।
এক্সপেরিমেন্ট গুলো করার জন্য বাক্সটিতে ক্রোকোডাইল ক্লিপ, পুশ পিন, এল ই ডি (LED), জেমস ক্লিপ, প্লাস্টিক উড, কপার দণ্ড, এল ডি আর (LDR), থার্মিস্টর, জেনার ডায়োড, ক্যাপাসিটর, রিং ম্যাগনেট, বেলুন, কার্ডবোর্ড ইত্যাদি সহ মোট ১৬ টিরও বেশি উপকরণ।
এক্সপেরিমেন্ট গুলো বাসায় নিজে নিজে করার জন্য ৩২ পাতার বিস্তারিত কালারফুল ম্যানুয়াল। যেখানে প্রতিটা এক্সপেরিমেন্ট খুব সুন্দরভাবে ছবিসহ বিস্তারিত বর্ননা এবং পদ্ধতি দেখিয়ে দেয়া হয়েছে।
এক্সপেরিমেন্টগুলোর পিছনে যেসব তড়িৎ বা বিদ্যুতের থিওরি গুলো কাজ করছে সেগুলো খুব সহজে বোঝার জন্য রয়েছে একটি ৪৫ পাতার রঙ্গিন গল্পের বই।
বাসায় বসে ভিডিও দেখে এক্সপেরিমেন্টগুলো করার জন্য রয়েছে সিডি যেখানে সবগুলো এক্সপেরিমেন্টের ভিডিও টিউটোরিয়াল দেয়া আছে।
এই বিজ্ঞান বাক্সটি দিয়ে খেলতে খেলতে আপনার বাচ্চার বিজ্ঞান শেখা ও ইঞ্জিনিয়ারিং এর হাতেখড়ি হয়ে যাবে। বাচ্চারা যখন ছোট ছোট মোটর, ব্যাটারি আর সুইচের কানেকশন দিয়ে নিজেদের জন্য ফ্যান তৈরি করে আপনার শরীরে হাওয়া দেবে, বাজার দিয়ে শব্দ সংকেত বানানোর পর সেটা আপনাকে শোনাবে, তখন নিশ্চয় আপনার অনেক ভালো লাগবে?
তড়িৎ তান্ডব বিজ্ঞানবাক্সটির ইংরেজি ভার্সন ও রয়েছে যেটির নাম Amazing Electricity
ট্যানগ্রাম
পৃথিবীতে যত প্রকার পাজল খেলা রয়েছে ট্যানগ্রাম তার মধ্যে একটি বিশেষ স্থানে রয়েছে। ট্যানগ্রাম হচ্ছে সাতটুকরো বিশিষ্ট বিশেষ আকৃতির একটি পাজল। এই টুকরোগুলোকে ট্যান বলা হয়। এই সাতটি ট্যানের ব্যবহার করে হাজার হাজার বিভিন্ন আকার দেয়া যায় যেমনঃ রকেট, প্রজাপতি ইত্যাদি। প্রাচীন কাল থেকে চীন দেশে এই খেলাটি প্রচলিত ছিল। ঊনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে ট্যানগ্রাম আমেরিকায় জনপ্রিয় হতে শুরু করে। এরপর অল্প সময়ের মধ্যে খেলাটি ইংল্যান্ডে ও ব্যাপকভাবে আলোচিত হয় এবং ধিরে ধিরে সারা ইউরোপে পৌঁছে যায়।
বক্সটির মধ্যে ৭টি আলাদা রঙ ও আকৃতির(ত্রিভূজ, চতুর্ভূজ এবং সামান্তরিক) জ্যামিতিক শেপ, একটি ম্যানুয়াল বই দিয়ে দেয়া আছে। শেপগুলো ম্যাগনেটিক হওয়ার কারণে হারাবে না।
ম্যানুয়াল বইটিতে গল্পের মাধ্যমে খুব সুন্দরভাবে ট্যানগ্রাম-এর ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে ও ২০০ টিরও বেশি এক্সারসাইজ দিয়ে দেয়া আছে।
অবসর সময় কাটানোর খেলা বা মাথা খাটানোর খেলা-যাই বলা হোক না কেন, শিশু-কিশোর বা বয়স্ক সবারই পছন্দের একটি খেলা হতে পারে ট্যানগ্রাম। এক কথায় বলতে গেলে মাত্র কয়েক মিনিটের মজার খেলা থেকে শুরু করে বেশ কয়েক ঘন্টার মাথা খাটানোর খেলা হিসেবে ট্যানগ্রামের জুড়ি মেলা ভার।
মজার পেরিস্কোপ
আলোর ঝলক
এবং তড়িৎ তাণ্ডব
বিজ্ঞানবাক্সের মধ্যে যে সকল এক্সপেরিমেন্টগুলো দেওয়া হয়েছে তাঁর মধ্য থেকে কিছু মজার এক্সপেরিমেন্টকে আরো বেশি শিক্ষণীয় করে তোলার জন্য মজার পেরিস্কোপ বিজ্ঞানবাক্সটি তৈরি করা হয়েছে। এটিকে বিজ্ঞানবাক্সের একটি সাশ্রয়ী সংস্করণ হিশেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।
ফ্যান তৈরি করা, নিজেই পেরিস্কোপ বানানো, নিউটনের বর্ণ চাকতির এক্সপেরিমেন্ট করা এই ৩টি মজার এক্সপেরিমেন্ট নিয়ে মুলত এই কিটটি তৈরী।
মোটর, ফ্যান, বর্ণ চাকতি, পেরিস্কোপ বক্স, বক্স দিয়ে যাতে করে পেরিস্কোপ বানানোর যায় তাঁর জন্য রয়েছে দুইটি আয়না।
সাবমেরিনে পানিতে ডুবে থেকেও পানির উপরের দৃশ্য দেখার জন্য যে পেরিস্কোপ ব্যবহার করে থাকে সেটিরই ছোটদের জন্য উপযোগী ভার্সনের একটি পেরিস্কোপ রয়েছে এই বাক্সের মধ্যে। এই পেরিস্কোপ টি দিয়ে খেলা করার মাধ্যমে ফিজিক্স বইয়ের আলোর অধ্যায় এর ভিবিন্ন টপিক যেমনঃ আলোর প্রতিসরণ, প্রতিফলন ইত্যাদি সম্পর্কিত একটি ধারণা পাবে, যা তাঁর বিভিন্ন ক্লাসের বিজ্ঞান বইয়ের পড়ায় সাহায্য করবে।
কম্পিউটার বা মোবাইল এর স্ক্রিন এর মধ্যে কিভাবে মাত্র তিনটি প্রধান রং থেকে এতসব রং তৈরী হয় সেটির একটি বৈজ্ঞানিক ও সহজ নীতি হাতে-কলমে বুঝতে ও শিখতে পারবে।
এক্সপেরিমেন্ট গুলো বাসায় নিজে নিজে করার জন্য রয়েছে ইউজার ম্যানুয়াল।
রসায়ন রহস্য
রসায়ন বিষয় টি নিয়ে বাচ্চাদের মধ্যে একটি ভীতি কাজ করে। কিন্তু, বাচ্চাদের এই ভীতি দূর করার জন্য তাদের কে রসায়ন ল্যাবের মধ্যে নিয়ে যাওয়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই। কিন্তু এই সুযোগ টা সব ক্ষেত্রে হয়ে ওঠে না। অথচ আমাদের আশেপাশের অতি সাধারণ বস্তু গুলো দিয়েই যে কত অসাধারণ কিছু তৈরি করা যায় এবং বাচ্চাদের রসায়ন এর ল্যাব এর এক্সপেরিমেন্ট গুলো করে দেখানো যায় তা আসলে আমরা হয়ত কখনো ভাবি না।
ফুড কালার, সোয়াবিন তেল আর ক্যালবো সি ট্যাবলেট এর মত খুব সাধারন জিনিস গুলো দিয়ে আপনার সন্তান যখন লাভা ল্যাম্প তৈরী করার মতো অসাধারণ একটি এক্সপেরিমেন্ট করে বিস্মিত হয়ে আপনাকে দেখাবে, তখন নিশ্চয় আপনার অনেক ভালো লাগবে?
ফুঁ না দিয়েই কিভাবে বেলুন ফোলানো যায়, কিশমিশকে কিভাবে নাচানো যায়, দুধের মধ্যে কিভাবে রংধনু বানানো যায়, লাভা ল্যাম্প কিভাবে তৈরি করতে হয়, তড়িৎ দিয়ে কিভাবে লবণ ভাঙা যায়, কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস কিভাবে সনাক্ত করতে এরকম অসাধারন ২০টিরও বেশি এক্সপেরিমেন্ট আছে রসায়ন রহস্যে।
এই এক্সপেরিমেন্ট গুলো করার জন্য রাবারের বল, গ্লিসারিন, বিকার, ফুড কালার, ডিশ ক্লিনার, কপার সালফেট, মোমবাতি, প্লাস্টিক ড্রপার, ক্যালবো সি ট্যাবলেট, বেকিং পাউডার এর মত আরো অনেক উপকরন রয়েছে। রসায়নের সব উপকরণ যেহেতু দিয়ে দেওয়া সম্ভব নয় সেজন্য সংগ্রহ করে নিতে হবে পানি, তেল, কোক, দুধ, কিসমিস, আলু; আরো কিছু জিনিস।
এক্সপেরিমেন্ট গুলো বাসায় নিজে নিজে করার জন্য ২২ পাতার বিস্তারিত কালারফুল ম্যানুয়াল। যেখানে প্রতিটা এক্সপেরিমেন্ট খুব সুন্দরভাবে ছবিসহ বিস্তারিত বর্ননা এবং পদ্ধতি দেখিয়ে দেয়া হয়েছে।
এক্সপেরিমেন্টগুলোর পিছনে যেসব তড়িৎ বা বিদ্যুতের থিওরি গুলো কাজ করছে সেগুলো খুব সহজে বোঝার জন্য রয়েছে একটি ৬০ পাতার রঙ্গিন গল্পের বই।
বাসায় বসে ভিডিও দেখে এক্সপেরিমেন্টগুলো করার জন্য রয়েছে সিডি যেখানে সবগুলো এক্সপেরিমেন্টের ভিডিও টিউটোরিয়াল দেয়া আছে।
এই সকল এক্সপেরিমেন্ট গুলো করার মধ্য দিয়ে আপনার সন্তান বুঝতে পারবে যে আমাদের চারপাশের খুব সাধারণ বস্তুগুলো যে আসলে কতটা অসাধারণ। রসায়নের বিভিন্ন কাঠখোট্টা বিক্রিয়ার সমীকরণ গুলোর মধ্যে যে কত সুন্দর বিষয়গুলি লুকিয়ে আছে তা তারা খুব সহজে জানতে ও বুঝতে পারবে। তাঁর কাছে এখন আর রসায়ন কে রসকষহীন মনে হবে না।
রসায়ন রহস্য বিজ্ঞানবাক্সটির ইংরেজি ভার্সন ও রয়েছে যেটির নাম Mystery Of Chemistry
অদ্ভুত মাপজোখ
তড়িৎ তান্ডব
যাদের কাছে ভালো লাগবে, অদ্ভুত মাপজোখ
তাদের অবশ্যয় ভালো লাগবে। এই বক্সটি মুলত শব্দ, বিদ্যুৎ, আই আর রশ্মি, ইত্যাদি মাপঝোক এর জন্য তৈরী করা হয়েছে। এই বক্সটি কিছুটা বড় শিশুদের জন্য তৈরী করা হয়েছে যেন তারা পরিমাপ নিয়ে নিজেদের চিন্তা ভাবনার পরিধি আরো বারিয়ে নিতে পারে।
বক্সটিতে আলো কিভাবে মাপা যায়, শব্দ কিভাবে মাপতে হয়, বিভিন্ন পাওয়ারের লাইটের তুলনা কিভাবে করতে হয়, রিমোট ভালো না নষ্ট তা নিরুপন কিভাবে করা যায়, কোন একটি ইলেকট্রিকাল সার্কিটের তাপমাত্রা মাপার প্রক্রিয়া, ক্যাপাসিটরে কিভাবে চার্জ দেয়া যায় এবং তা ঠিকঠাক কাজ করছে কিনা তা কিভাবে দেখা যায় সহ আরো প্রায় ৫০টি এক্সপেরিমেন্ট রয়েছে। এমনকি রিমোটের অদৃশ্য রশ্মি খুঁজে বের করার কাজটাও খুব সুন্দরভাবে করা যাবে এর মধ্যে থাকা IR রিসিভার এর মাধ্যমে।
এই বক্সটিতে মজার একটি যন্ত্র আছে যার নাম মাল্টিমিটার। এটা দিয়ে কারেন্ট থাকে শুরু করে, ভোল্টেজ, রেজিস্ট্যান্স ইত্যাদি পরিমাপ করা যায়। এছাড়াও বক্সটিতে আরো থাকছে থার্মিস্টার, রেজিস্টার, এল.ডি.আর, এল.ই.ডি, সাধারন ডায়োড, জেনার ডায়োড, IR রিসিভার, ব্যাটারি, ব্যাটারি কেসিং, বাযার, ছোট ব্যাটারি, ওয়্যারলেস মডিউল, ক্যাপাসিটর, সাউন্ড সেন্সর, অডিও জ্যাক, মিউজিক্যাল মডিউল, ক্রোকোডাইল ক্লিপ এর মত প্রয়োজনীয় অনেক যন্ত্রপাতি। এর বাইরে আরো কিছু জিনিস প্রয়োজন পড়বে যেমনঃ মোমবাতি, টর্চ, বাসার টিভি রিমোট, গরম চায়ের কাপ, বরফ ইত্যাদি যা খুব সহজে জোগাড় করে নেয়া যাবে।
এক্সপেরিমেন্ট গুলো করার জন্য চিত্র ও বর্ণনা সহ আলাদা আলাদা ম্যানুয়াল কার্ড।
বক্সের এক্সপেরিমেন্ট গুলোর বাইরে আরো অনেকগুলি প্রজেক্ট করার আইডিয়া দেয়া আছে।
আপনার সন্তান এই এক্সপেরিমেন্ট গুলো করার মধ্য দিয়ে বাস্তব জগতের অনেক সমস্যা সমাধান করতে শিখবে। যেমনঃ ধরুন আপনি খেলা দেখছেন, কিন্তু হুট করে রিমোট কাজ করা বন্ধ করে দিল। আপনি বুঝতে পারছেন না সমস্যাটা কি রিমোটের, নাকি ব্যাটারির? এখন কি রিমোট টা দোকানে পাঠাবেন? না কোনো প্রয়োজন নেই! অদ্ভুত মাপজোখের উপকরণগুলো ব্যবহার করে আপনার সন্তানই তৎক্ষণাৎ বলে দিতে পারবে সমস্যটা কোথায় হয়েছে!
অদ্ভুত মাপজোখ বিজ্ঞানবাক্সটির ইংরেজি ভার্সন ও রয়েছে যেটির নাম Fun With Measurement
ফোকাস চ্যালেঞ্জ
যে কোন কাজে সফলতা প্রাপ্তির প্রধান শর্তই হচ্ছে মনোযোগ, ধৈর্য ও অধ্যবসায়। এই তিনটি গুণ একজন মানুষের ্মধ্যে হুট করে চলে আসে না। দীর্ঘদিনের অভ্যাসের মধ্য দিয়ে মানুষ এই গুণ গুলো অর্জন করতে পারে। ফোকাস চ্যালেঞ্জ
বিজ্ঞান বাক্সটি মুলত বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় খেলা Buzz Wire এর বাংলাদেশী ভার্শন।
এই গেমটি শুধু শিশু নয়, যেকোন বয়সের মানুষের ধৈর্য্য এবং মনোযোগ বৃদ্ধি করবে। তুমুল জনপ্রিয় এই গেমটি অনেক সহজ এবং উত্তেজনাপূ্র্ণ! একটি এ্যালুমিনিয়ামের তৈরী লুপকে কপারের তৈরী তারের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে স্পর্শ না করে নিতে হবে, এটাই হচ্ছে গেমটির নিয়ম।
- কিটটিতে রয়েছে একটি সার্কিট বোর্ড যার উপর আঁকাবাঁকা ৩টি ধাতব তার জুড়ে দেয়া আছে। সাথে আছে ২ টি ছোট-বড় লুপ ও ২ টি ব্যাটারি। একটি ছোট এবং অন্যটি বড় বড় লুপ হওয়ার কারণ হচ্ছে, বড় লুপটি ব্যবহার করে চ্যালেঞ্জটি কমপ্লিট করতে পারলে নেক্সট লেভেলে হিসেবে চ্যালেঞ্জটিকে আরো একটু কঠিন করার জন্য ছোট লুপটিকে ব্যবহার করা যাবে।
এই কিটটি বিনোদনের মাধ্যমে সময় কাটানোর এবং নিজের ধৈর্য শক্তি বৃদ্ধি করার জন্য একটি অসাধারন সংযোজন।
ফোকাস চ্যালেঞ্জ বিজ্ঞানবাক্সটির ইংরেজি ভার্সন ও রয়েছে
ক্যাপ্টেন কিউরিয়াস
বিজ্ঞান বইয়ের বিভিন্ন ছোট বড় থিওরিগুলো ব্যবহার করেই প্রযুক্তি বিশ্বের বড় বড় সব পরিবর্তন ও আবিষ্কার গুলো করা হয়ে থাকে। কিন্তু, আমাদের দেশে শিক্ষার্থীরা খুব বেশী তা নিজের চোখে দেখার সুযোগ পায় না। যার ফলস্বরূপ আমাদের দেশের শিক্ষার্থীদের কাছে বিজ্ঞান পড়াটা কেবলমাত্র পরীক্ষায় ভালো নাম্বার পাওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। ক্যাপ্টেন কিউরিয়াস
স্মার্টকিটটিতে বিজ্ঞান বইয়ের ছোট ছোট থিওরিগুলো ব্যবহার করে কিভাবে একটি বড় প্রযুক্তি তৈরি করা হয় তা দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে।
মিশন ইলেক্ট্রোক্যানন আর মিশন গভীর পানির ডুবুরী নামে দুইটি মজার গেম আছে এই বক্সটিতে যা বাচ্চাদের খুবই পছন্দ হবে।
ইলেক্ট্রোম্যাগনেট থিওরি কে ব্যবহার করার মাধ্যমে কীভাবে খুব সহজে আস্ত একটি কামান বানানো যায় তা দেখানো হয়েছে মিশন ইলেক্ট্রোক্যানন এর অংশটির মধ্যে। সবচেয়ে মজার বিষয় টি হচ্ছে, সাধারণ কামান গুলো গোলা ছোড়ার সময় বিকট শব্দ করলেও ইলেক্ট্রোক্যানন কামান গোলা ছোড়ার সময় কোন প্রকারের শব্দ করে না। বক্সে মধ্যে দিয়ে দেয়া ইন্সট্রুমেন্ট ও দিক-নির্দেশনা গুলো অনুসরণ করার মাধ্যমে বাচ্চারা খুব সহজে নিজে নিজেই বানিয়ে নিতে পারবে একটি ইলেক্ট্রোক্যানন।
মিশন ইলেক্ট্রোক্যানন টি কমপ্লিট করার জন্য দেয়া হয়েছে তড়িত কামান, কানেক্টরসহ ব্যাটারি বক্স, পাঁচটি প্লাস্টিকের সৈন্য, ছয়টি গোলা ইত্যাদি প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম।
বাক্সটির দ্বিতীয় অংশ অর্থাৎ, গভীর সমুদ্রের অ্যাডভেঞ্চার অংশটিতে দেখানো হয়েছে, পানির মধ্যে থাকা প্লবতা শক্তি কে ব্যবহার করার মাধ্যমে কীভাবে পানিতে কোন কিছু ভেসে থাকে অথবা ডুবে যায়।
গভীর পানির ডুবুরী অংশ টি কমপ্লিট করার জন্য ২ টি কার্তেসিয়ান ডুবুর ও ২ টি রকেট দিয়ে দেয়া হয়েছে।
বিজ্ঞানের থিওরি গুলো বোঝার জন্য রয়েছে বিস্তারিত ব্যাখ্যা সহ ম্যানুয়াল বই।
বক্সের এই দুইটি অংশকে বাচ্চাদের জন্য দুটি মিশনের মতো করে উপস্থাপন করা হয়েছে যার ফলে বাচ্চারা এক্সপেরিমেন্ট গুলো করে অনেক বেশী আনন্দ পাবে।
ক্যাপ্টেন কিউরিয়াসের এই দুটি এক্সপেরিমেন্ট করার মাধ্যমে বাচ্চারা বিজ্ঞানের দুটি চমৎকার সূত্র শিখতে পারবে। এই সূত্রগুলি শিশুরা পরবর্তীতে যখন তাদের বিজ্ঞান বইয়ে পাবে তখন সেগুলো তাদের জন্য অনেক বেশী উপভোগ্য হবে।
শব্দকল্প
শব্দকে আনন্দের সাথে জানতে `শব্দকল্প` বিজ্ঞান বক্সটি তৈরী করা হয়েছে। শব্দ কি দেখা যায়? এই বক্সের মধ্যে দেয়া এক্সপেরিমেন্ট গুলো মাধ্যমে শব্দ কীভাবে তৈরি হয় সেটা তো দেখা যাবেই, পাশাপাশি শব্দ নিয়ে অনেক প্রজেক্ট ও বানানো যাবে। শব্দ বিষয়ক এই এক্সপেরিমেন্টগুলো একজন শিক্ষার্থীর উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণির জন্যেও উপযোগী হবে।
একটি বেলুনের মধ্যে ত্রিভুজ- চতুর্ভুজ- পঞ্চভুজ অথবা এমন ধরণের অন্য কোন ছোট বস্তু ঢুকিয়ে বেলুনের মজার চিৎকার বের করা, কাগজ দিয়ে বানানো কাপ ও ভেজা সুতা দিয়ে মুরগীর ডাক বের করার পদ্ধতি, মিউজিক বক্স ব্যবহার করে চমৎকার সব শব্দ তৈরি করার মজার খেলা, বক্সে মধ্যে থাকা কাগজের কাপ ব্যবহার করে টেলিফোন বানানো সহ বক্সটিতে আছে সর্বমোট ১৭ টি মজাদার এক্সপেরিমেন্ট ও ৫০ টিরও বেশী এক্টিভিটি।
শব্দ কল্প বক্সটিতে অনেক মজার যন্ত্র আছে যেমনঃ মিউজিক বক্স, ক্রোকোডাইল ক্লিপ, এল ডি আর (LDR), বেলুন, অডিও জ্যাক, হুইসেল, সাউন্ড মডিউল, লেজার মডিউল, মিউজিক্যাল মডিউল, ডটবার মডিউল, রিং ম্যাগনেট, চিয়ারিং স্টিক, সাউন্ড জেনারেটর, ছোট্ট আয়না, রাবার পাইপ,বাঁশি, স্লিংকি, স্টেথোস্কোপ হেডসহ মোট ১৮ টিরও বেশি উপকরন। এছাড়াও প্রয়োজন হতে পারে সিরিঞ্জ, প্লাস্টিক পাইপ, প্লেট, চামচ, চাল, টিস্যু রোল, হেডফোন বা ইয়ারফোন, ইত্যাদি যেগুলো খুব সহজে জোগাড় করে নেয়া যাবে।
এক্সপেরিমেন্টগুলোর পিছনে যেসব বিজ্ঞানের থিওরি গুলো কাজ করছে সেগুলো খুব সহজে বোঝার জন্য রয়েছে একটি ৬০ পাতার রঙ্গিন গল্পের বই।
বাচ্চারা যেন নিজেরা খুব সহজে এই এক্সপেরিমেন্টগুলো করতে পারে সেজন্য রয়েছে ৪০ পাতার মাল্টিকালার ম্যানুয়াল।
বাসায় বসে ভিডিও দেখে এক্সপেরিমেন্টগুলো করার জন্য রয়েছে সিডি যেখানে সবগুলো এক্সপেরিমেন্টের ভিডিও টিউটোরিয়াল দেয়া আছে।
শব্দকল্প বিজ্ঞানবাক্সটির ইংরেজি ভার্সন ও রয়েছে যেটির নাম Sound Bound
জায়ান্ট পিক্সেল
জায়ান্ট পিক্সেল বিজ্ঞান বাক্সটি ৩টি মৌলিক রং দিয়ে হাজারো রং বানানোর একটি অসাধারন মজার খেলা। আপনি যদি আপনার বাচ্চাকে বলেন যে হলুদ রংয়ের মধ্যে আসলে একসাথে দুটো রং আছে অর্থাৎ এই রং টি মুলত দুটি ভিন্ন রং দ্বারা তৈরী! সে নিশ্চয় অনেক বেশি অবাক হবে, তাই না? কিন্তু তাকে যদি আপনি রংয়ের ভেতরে থাকা বিজ্ঞান বুঝিয়ে দেয়া দেন। পৃথিবীতে তো হাজার হাজার রং রয়েছে, কিন্তু সে যদি জানতে পারে যে মাত্র তিনটি মৌলিক রং (লাল, নীল ও সবুজ) ব্যবহার করেই আমরা চাইলে পৃথিবীর সকল রং তৈরি করে ফেলতে পারি তাহলে তাঁর ভিতরে নিশ্চয় আরো কৌতুহল ও জানার আরো আগ্রহ বাড়বে তাই না?
রংয়ের মধ্যকার যত সব রহস্য রয়েছে, শুধুমাত্র তিনটি রং কে একটির সাথে আরেকটি মিশিয়ে বানাই পৃথিবীর সকল রং, একটি রংয়ের ভেতরে রয়েছে আরো অনেক রং, ফিল্টার দিয়ে রং ভ্যানিশ করার মত অনেক মজার সব এক্সপেরিমেন্ট।
যদিও বক্সটিতে খুবই অল্প সংখ্যক সরঞ্জাম আছে কিন্তু এগুলো দিয়ে অনেক অনেক এক্টিভিটি করা সম্ভব। একটা আরজিবি এলইডি মডিউল, মজার চশমা, ব্যাটারি ও তিন রংয়ের ফিল্টার পেপার দেয়া আছে এই বক্সটিতে। কিন্তু একটি ম্যাজিক বক্সের মতই সব ম্যাজিক আছে আরজিবি এলইডি মডিউলে।
আরজিবি এলইডি মডিউলটিকে একটি গুপ্তধন বললেও ভুল হবে না। এই মডিউলেই আছে এলইডি লাইট ও মৌলিক রংয়ের তিনটি নব আর এইগুলো ঘুরালেই চোখের সামনে খেলা করবে হাজার হাজার রং। মুলত এই নবগুলো ঘুরালে এলইডি লাইটে রংয়ের মিশ্রণের ফলে তৈরি হওয়া নতুন রং যেগুলো দেখতে অনেক সুন্দর লাগে। এখানেই শেষ নয়, মজার চশমা চোখে দিলে নতুন রং গুলো কোন কোন রংয়ের সমন্বয়ে গঠিত এবং কোন রং গুলো কি পরিমাণে আছে তাও পর্যবেক্ষণ করা যাবে ইত্যাদি অনেক মজার এক্সপেরিমেন্ট করা যাবে এই বক্সটি দিয়ে।
বিজ্ঞানের থিওরি গুলো বোঝার জন্য রয়েছে বিস্তারিত ব্যাখ্যা সহ ম্যানুয়াল বই।
শেষ কথা
বিজ্ঞানবাক্স বিগত বেশ কিছু বছর যাবত সচেতন অভিভাবক এবং কৌতূহলী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। বিজ্ঞানবাক্সের এক্সপেরিমেন্টগুলো পাঠ্যবইয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট হওয়ায় শিক্ষকদের পাঠদানেও এটি অনেক সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।
বিজ্ঞানবাক্স গুলো আপনার শিশুকে বিজ্ঞানের আনন্দময় অদেখা জগতের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে পারে। এটি আপনার সন্তানের ভবিষ্যতের জন্য একটি বিনিয়োগ। তাই আপনার বাচ্চার বিজ্ঞানের প্রতি ভিতি দূর করতে, বিজ্ঞানকে বোঝার দিকে এক ধাপ এগিয়ে রাখতে বিজ্ঞান বাক্স হতে পারে একটি সুন্দর সমাধান।
এছাড়া শিশুদের মনের কৌতুহল মেটানোর জন্য বিজ্ঞানবাক্সগুলো হতে পারে এক শিক্ষামূলক উপহার, জন্মদিন কিংবা অন্য যে কোন উপলক্ষ্যে শিশু-কিশোরদের জন্য সেরা উপহার হতে পারে এই বিজ্ঞানবাক্সগুলো।